পুরুষ লিঙ্গপূজা

নিজেদের ভাগ্যবান করতে ঈশ্বরকে খুশি করার চেষ্টা হাজার বছর ধরে করে আসছে মানুষ। আর দক্ষিণ জাপানের মানুষ এই চেষ্টা করে লিঙ্গ পূজার মাধ্যমে। জাপানিরা ধর্মীয়ভাবে গোঁড়া নয়। এই পূজা করতে মন্দিরে পৌঁছে নিজেকে পরিছন্ন করে নেন জাপানীরা। দেবমূর্তি পুরুষাঙ্গটিকে শ্রদ্ধা করার প্রথম উপায়ই হচ্ছে পরিচ্ছন্নতা। মন্দিরগুলোতে পরিচ্ছন্নতার জন্য যে জায়গাটি রয়েছে তাকে ‘ছ-যুবা’ বলে। এখানে বসার জায়গা ও পানির বেসিন রাখা আছে। নিজেকে পরিচ্ছন্ন করার পর দেবীর প্রতি নিবেদিত জল থেকে এক চামচ জল নিয়ে নিজের মুখে ও মাথায় দেন জাপানীরা।


নিজেকে পরিচ্ছন্ন করে জাপানীরা দেবতা পুরুষাঙ্গটিকে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করে। এটা বিশ্বাস করা হয় যে, শ্রদ্ধা নিবেদন করে নারীরা মাতৃত্ব লাভ করবে এবং পুরুষের লিঙ্গ অনেক বলিষ্ঠ হবে।


জাপানের দেবতা পুরুষলিঙ্গের মন্দিরগুলোতে পুরুষলিঙ্গের গায়ে কাগজের টুকরা আটকানো অবস্থায় দেখা যায়। এগুলোকে ‘অমিকুজি’ বা ‘ভাগ্য লিখন’ বলা হয়। কাগজের টুকরাগুলোর লেখা দেখে জাপানীরা তাদের ভবিষ্যৎ জানতে পারে। সাধারণত,ভবিষ্যৎ জানার পর কাগজের টুকরাটিকে ঐ স্থানের কোন গাছের সাথে বেঁধে আসে পূজারীরা।


জাপানের মন্দিরগুলোর প্রবেশপথে ‘তরী’ নামের একধরণের দরজা রয়েছে। ভেবে নেওয়া হয়, জাপানীরা এই দরজাগুলো দিয়ে মানুষের বসবাসের জায়গা থেকে ঈশ্বর প্রদত্ত আশ্রয়স্থলে প্রবেশ করে। কিন্তু জাপানের ‘ইয়জ’ নামের মন্দিরে একটি ভিন্ন ধরণের তরী গেট রয়েছে,যেটি আকারে ছোট। জাপানীরা মনে করে এই গেইটের মধ্যে দিয়ে মাথা নিচু করে প্রবেশ করলে পিঠের ব্যথা চলে যাবে এবং যৌনক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। তবে আপনাকে ভিতরে প্রবেশের সময় অবশ্যই জুতা খুলে প্রবেশ করতে হবে, যাতে দেবতার প্রতি আপনার যথাযথ শ্রদ্ধা প্রকাশ পায়।


জাপানের এই মন্দিরগুলোতে ‘ওমামুরি’ নামে সৌভাগ্যের প্রতীকস্বরূপ একধরণ বস্তু দেখা যায়। এই বস্তুগুলো বিভিন্ন মন্দিরের দেবতার ভিন্নতার কারণে ভিন্ন ভিন্ন ধরণের হয়। তাই ‘ইয়জু’ মন্দিরে সৌভাগ্যের প্রতীকস্বরূপ বস্তুগুলো পুরুষলিঙ্গের মতো,যা সৌভাগ্য বয়ে আনে এবং দুর্ভাগ্যকে দূরে ঠেলে দেয় বলে বিশ্বাস করা হয়।


মন্দিরের একপ্রান্তে ‘কাঠের তৈরি পঠ’ ঝুলিয়ে রাখা হয়। একে স্থানীয় ভাষায় ‘এমা’ বলা হয়। ‘এমা’ নামের আসল অর্থ হচ্ছে ‘ঘোড়ার ছবি’। এমা’র পটগুলোর একপাশে বিভিন্ন চিত্র থাকে আর অন্যপাশ খালি থাকে। খালি পাশে পরিদর্শকরা তাদের মনের ইচ্ছা প্রকাশ করতে পারে। এমা’র পটগুলো জাপানের বিভিন্ন মন্দিরে বিক্রি করা হয়।


এই পুরো বিষয়টিই পরিদর্শকদের কাছে হাসি-তামাসার বিষয়ে মনে হতে পারে। কিন্তু জাপানীদের কাছে এটি মোটেও হাসি-তামাসা ও অবাক করার মতো বিষয় নয়। মূলত এখানে পুরুষলিঙ্গের পূজা করে দাম্পত্য জীবনের সুখ,সন্তান কামনা এবং প্রচুর ফসল প্রার্থনা করা হয়।
Share this article :

Post a Comment

 
Support : Home | Contact | Privacy Policy
Copyright © 2013. ChotiTimes - All Rights Reserved
Template Created by chotitimes.tk Published by Max
Proudly powered by Choti Family Ltd